বিশ্বপতি জো বাইডেনের দপ্তরে সম্প্রতি এক তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়েছে। তদন্ত কি নিয়ে? না করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি কোথা থেকে ও কিভাবে, সেই বিষয় নিয়েই তদন্ত। না, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই তদন্তের সাথে যুক্ত নয়। গোটা বিশ্বের হয়ে বিশ্বের এক মাত্র অভিভাবক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিল। কিন্তু কোন কোন সংস্থাকে দিয়ে তারা সেই তদন্তকর্ম সম্পন্ন করেছে। সেই তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। প্রকাশ পেয়েছে শুধু তদন্তের ফলাফল। স্বভাবতঃই আবিশ্ব মানুষ এই তদন্তের ফলাফল জানার অপেক্ষাতেই এতদিন ধৈর্য্য ধরে দিন গুনেছে্। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের করা তদন্তের উপরে তো আর কোন কথা নেই। একেবারে বেদবাক্য। এখন দেখে নেওয়া যাক সেই তদন্তকর্মের রিপোর্টে কি কি ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় প্রতিটি প্রথম শ্রেণীর সংবাদপত্রেই অবশ্য সেই ফলাফল যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশও করা হয়েছে। বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ারের করা তদন্তের ফলাফল। ছেলেখেলা নয়। যে যে বিষয়গুলি এই তদন্ত রিপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলির ভিতর প্রথমেই বলা হয়েছে। করোনা ভাইরাস কোনভাবেই বায়োলজিক্যাল ওয়েপন নয়। এখানেই একটু হোঁচট খেতে হবে আমাদের। আমরা যারা এতদিন বিশ্বাস করে এসেছিলাম, বায়োলজিক্যাল ওয়েপন হিসাবেই চীন এই অস্ত্র দিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষকেই মেরে ফেলতে চেয়েছিল, তাদের অবশ্য এই রিপোর্ট হজম করতে বেশ বেগ পেতে হবে। আমাদের ভিতরে যারা আবার নিজামুদ্দিনে ভারতবিরোধী ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব আউড়িয়ে হিন্দুত্ববাদী দেশপ্রেমে মুহুর্মুহ ভারতমাতা কি জয় বলে দেশ থেকে রাষ্ট্রদ্রোহীদের খুঁজে বার করতে আসরে নেমে পড়েছিলাম টিভির বিশেষ বিশেষ নিউজ চ্যানেল খুলে রেখে। তাদেরও এই রিপোর্ট হজমে অসুবিধা আছে। যাই হোক বিশ্বপতি’র দপ্তরে জমা পড়া রিপোর্ট। চ্যালেঞ্জ করাও মুশকিলের বিষয়।
এদিকে ভাইরাসের উৎস সম্বন্ধে তদন্তকারীরা সকলে ঐকমতে পৌঁছাতেও পারেন নি। বস্তুত তদন্তকারী দলের সদস্যরা নিজেরাই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। ফলে তাদের ধারণা, হয় ভাইরাসটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক কারণেই উদ্ভুত হয়ে মানুষের ভিতরে সংক্রমিত হয়েছে। না হলে কোনভাবে গবেষণাগার থেকেও দুর্ঘটনাজনিত কারণে ভাইরাসটি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতেও পারে। এখন এ কেমন তদন্ত? আর কেমনই বা তার ফলাফল? আবিশ্ব সাধারণ মানুষও তো মিডিয়াতন্ত্রের পাঠশালায় গত দুই বছর ধরেই এই দুইটি কারণের ভিতরেই ঘোরাফেরা করেছে। যার যেমন পলিটিক্যাল এফিলিয়েশন। তার ভিত্তিতে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন। জেনেটিক ইঞ্জিয়ারিং এর মাধ্যমে এই ভাইরাসটি তৈরী করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তাদের কাছে নির্দিষ্ট কোন তথ্য বা প্রমাণ নেই। ফলে হ্যাঁ কিংবা না, কোনটিই তারা নিঃসন্দেহে বলতে পারছেন না। বাহবা তদন্তের নমুনা। তারা শুধু একটি বিষয়েই নিশ্চিত যে কেউ জৈবাস্ত্র হিসাবে এই ভাইরাস তৈরী করেনি। এখানে খুব সাধারণ বুদ্ধিতেই তাদের এই নিশ্চিত হওয়াও যে কতটা অনিশ্চিত ব্যাপার। সেটি বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথাও নয়। যাদের কাছে নির্দিষ্ট কোন তথ্য বা প্রামাণই নেই। কোন যুক্তিতে তারা নিশ্চিত হচ্ছেন যে এটি প্রাকৃতিক কারণেই সৃষ্টি হয়েছে? না, তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশ থেকে এই তদন্ত কমিটি গঠিত হয় নি। ফলে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে হয় ভাইরাসটি প্রাকৃতিক কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। আর তা না হলে এটি কোন গবেষণাগার থেকেই লিক করেছে। এই যে হয় এটি ঘটছে আর তা না হলে ঐটি ঘটছে। এও যদি কোন তদন্তকারী দলের রিপোর্ট হয়। তাহলে সেই তদন্তের গুরুত্ব সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হতে গেলে যুক্তি এবং বুদ্ধি দুটি বিষয়কেই কি বিসর্জন দেওয়া ভালো নয়? হ্যাঁ এমনই এক তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়েছে বিশ্বপতি জো বাইডেনের দপ্তরে।
তাহলে আমাদের হাতে কি রইল? আমরা ঠিক কোন বিষয়টিকে এবারে বেদবাক্য বলে গ্রহণ করবো? বিশ্ব জুড়ে মানুষের জীবন জীবিকা প্রায় থমকে রয়েছে। অথচ একটি ভাইরাস সম্বন্ধে মিডিয়াতন্ত্রের যাবতীয় প্রচারের বাইরে আসল সত্যটুকু আজও ধামাচাপাই রয়ে গেল। মিডিয়াতন্ত্রের প্রচারে রাজনীতির লাভের অংকে যার যেমন স্বার্থরক্ষা হয়। সেসবই হয়েছে। হচ্ছে এবং আরও হবে। অথচ মানুষ আজকে যে অবস্থার চক্রব্যূহে আটকা পড়ে রয়েছে। সেই অবস্থার পিছনের কারণ ও কুশিলবদের আড়াল করতেই এই ধরণের তদন্ত এবং এই ধরণের তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করা ছাড়া বিশ্বের একমাত্র অভিভাবকের আর করারও কিছু ছিল না। আসলে একটা মিথ্যে ঢাকা দিতে যে একশোটা মিথ্যে তৈরী করতে হয়। তারপরে আসল সত্য প্রকাশের আর কোন রাস্তাই খোলা থাকে না। নাহলে নিজের মুখ নিজেই পোড়াতে হয়। সে তো আর সম্ভব নয়। আর ভ্যাকসিন বাণিজ্যের স্বার্থও সেকাজ করতে দিতে পারে না। নিউ নরম্যাল বিশ্বের নিয়ন্ত্রণ কিন্তু সেই ভ্যাকসিন বাণিজ্যের মুঠোতেই। ফলে এই ধরণের লোকঠকানো তদন্ত এবং তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ কারও সেই নিউ নরম্যাল বিশ্বের ণত্ব এবং ষত্ব।
২৯শে আগস্ট’ ২০২১
কপিরাইট সংরক্ষিত